সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:রাজশাহীর মোহনপুরে উত্ত্যক্তের ঘটনায় নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। ওই ছাত্রীর নাম কুমারি অষ্টমী (১৭)। সে উপজেলার ঘাসিগ্রামের শ্রী নিমাইয়ের মেয়ে। গতকাল সকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় এক শিক্ষক, ইউপি সদস্যসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও ছয়জনকে আসামি করে অষ্টমীর বড় ভাই শ্রী সঞ্জয় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ওই স্কুলছাত্রীর স্কুলের সহকারী শিক্ষক শরিরত আলী (৪০), ঘাসিগ্রামের দুলাল হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী রুবিনা বেগম (৩৫) ও ইউপি সদস্য ওমর আলী (৪৬)। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া নিহতের মরদেহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্কুলছাত্রীর ভাবি ইতি কুমারি জানান, গত বুধবার রাতে ঘরে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে তার ননদকে অনেক বার ডাকাডাকির পর কোনো সাড়া না পেয়ে অন্য কক্ষের জানলা দিয়ে দেখতে পান গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে অষ্টমী। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
মোহনপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, স্কুলছাত্রী ছিল হিন্দু পরিবারের মেয়ে। তার সহপাঠী উত্ত্যক্তকারী গোলাম মোস্তফা (১৭)। তারা দুজন উপজেলা ঘাসিগ্রাম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। নিহত স্কুলছাত্রী ঘাসিগ্রামের নিমাই সরকারে মেয়ে। সহপাঠী বাজেদেওপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে গোলাম মোস্তফা। প্রায় দেড় বছর ধরে সহপাঠী গোলাম মোস্তফা স্কুলছাত্রী কুমারি অষ্টমীকে প্রেম নিবেদন করে আসছিল। গত ২০১৯ সালে ১১ নভেম্বর প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় গোলাম মোস্তফা তার লোকজন নিয়ে স্কুলছাত্রী কুমারি অষ্টমীকে অপরহণ করে। ওই দিন সন্ধ্যায় মোহনপুর থানায় পুলিশ স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। পরে আদালত থেকে জামিনে আসে মোস্তফা। আবারও স্কুলছাত্রীকে মোবাইল ফোনে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। উত্ত্যক্তকারী গোলাম মোস্তফাকে সহযোগিতা করে তার স্কুলের সহকারী শিক্ষক শরিরত আলীসহ অন্যরা।
মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ জানান, ছয় আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।